এডিনবুর্ঘ, ২১ জুন : স্কটিশ পার্লামেন্টের গার্ডেন লবিতে গত বৃহষ্পতিবার (১৯ জুন) সর্বদলীয় ঈদুল আজহার অভ্যর্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ফয়ছল চৌধুরী এমএসপি (লেবার), ড. পাম গোসাল এমএসপি (কনজারভেটিভ) ও উইলি রেনি এমএসপি (লিবারেল ডেমোক্র্যাট)। অনুষ্ঠানটিতে এমএসপি, কূটনীতিক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি অংশ নিয়ে স্কটল্যান্ডে সমতা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য পার্লামেন্টের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
ফয়ছল চৌধুরী এমএসপি বলেন, “এই ধরনের আয়োজন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমাদের অনন্য বৈচিত্র্যকে সশ্রদ্ধ জানাতে হবে এবং আরও সহনশীল এক স্কটল্যান্ডের পথে একসঙ্গে অগ্রসর হতে হবে। আজও সমাজে বর্ণবাদ ও বৈষম্য বিদ্যমান, তাই আমাদের সম্মিলিত দায়বদ্ধতা হলো এমন এক দেশ গড়া, যেখানে প্রত্যেক মানুষ—যা‘ই হোক তার পটভূমি—সমানভাবে বিকাশ লাভ করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিল বিবি, লিয়াম কের, শ্যারন ডোয়ে, প্যাট্রিক হারভি (স্কটিশ গ্রিন পার্টির সহ-নেতা), কাউকাব স্টুয়ার্ট (সমতা বিষয়ক মন্ত্রী), এবং সদ্য নির্বাচিত ডেভি রাসেল—যাঁরা সবাই একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুবাদী স্কটল্যান্ডের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুম্মার জাভেদ, গ্লাসগোতে পাকিস্তানের কনসাল জেনারেল; তুরস্কের ডেপুটি কনসাল জেনারেল; এবং ড. আদরিস, মুসলিম কাউন্সিল অব স্কটল্যান্ড-এর চেয়ার—যাঁরা এই অনুষ্ঠানের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বকে তুলে ধরেনস্কটল্যান্ডের প্রথম মন্ত্রী জন সুইনি এমএসপি বলেছেন, “আজ ফয়ছল এবং আমি পার্লামেন্টে—সদয়তা, অন্তর্ভুক্তি ও সহনশীলতার অগ্রদূত স্যার জিওফ পামারের উত্তরাধিকারের কথা স্মরণ করেছি। তাঁর চেতনা অনুসরণ করে আমি আবারও বলছি, আমি এমন একটি স্কটল্যান্ডে বিশ্বাস করি যেখানে সব পটভূমির মানুষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও সামষ্টিক কল্যাণের ভিত্তিতে একত্রিত হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যখন অনেক মুসলিম সম্প্রদায় উদ্বেগ ও ভয়ের মধ্যে রয়েছে, তখন আমি স্পষ্ট বলতে চাই—প্রথম মন্ত্রী হিসেবে আমি এমন এক অন্তর্ভুক্তিমূলক স্কটল্যান্ডের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, যেখানে সব সম্প্রদায় ঐক্য ও সৌহার্দ্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।”
ফয়ছল চৌধুরী এমএসপি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তাদের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেনএলিসন জনস্টোন (প্রেসাইডিং অফিসার), রাসেল ফিন্ডলে এমএসপি (স্কটিশ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা) ও আনাস সারওয়ার এমএসপি (লেবার পার্টির নেতা), যারা নাগরিক সম্পৃক্ততা, সামাজিক সংহতি ও ন্যায়বিচারের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
অনুষ্ঠানটি মুসলিম কাউন্সিল অব স্কটল্যান্ড ও গ্লাসগোতে পাকিস্তান কনস্যুলেটের সহযোগিতায় আয়োজিত হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সকল অংশীদারের মধ্যে ঐক্য, দয়া ও অন্তর্ভুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছে—বিশেষ করে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার এই সময়ে, যখন পার্লামেন্টের মতো পাবলিক ইনস্টিটিউশনদের ভুমিকা সবার মধ্যে বিশ্বাস ও সৌহার্দ্য গড়ে তোলায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
ফয়ছল চৌধুরী বলেন, “২০২১ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী শিক্ষা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছি—হোক তা পার্লামেন্টের গ্রুপের মাধ্যমে বা সম্প্রদায়ভিত্তিক আয়োজন। এটি আমার হৃদয়ের খুব কাছের একটি বিষয়।
উপসংহারে উইলি রেনি বলেন, “আজকের রাতটি বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতীক। ফয়ছল যদি পার্লামেন্টে না থাকতেন, তবে এই কণ্ঠস্বর এতটা শক্তিশালী হতো না।”
এই অনুষ্ঠান স্কটল্যান্ডের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এটি ছিল একটি উন্মুক্ত স্থান যেখানে সংস্কৃতি, ধর্ম এবং জনজীবনে মুসলিমদের অমূল্য অবদান উদযাপন করা হয়। একইসঙ্গে এটি সংলাপ, সংযোগ ও স্বীকৃতির সুযোগ তৈরি করে, এবং স্কটল্যান্ডের সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সামাজিক ঐক্যের প্রতিশ্রুতিকে আরও দৃঢ় করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan