মাধবপুর, (হবিগঞ্জ) ২ আগস্ট : হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ মো: ফয়সল বলেছেন, নির্বাচন হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এসএসসি পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়াকে তিনি এর প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে ফয়সল বলেন,পাশের হার বাড়িয়ে তিনি ড. ইউনূসের মতো নোবেল জিততে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে তারাই মন্ত্রী, এমপি, সচিব হবে। তাই শিক্ষকদের নির্দেশনা মেনে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে। আগামী বছর মাধবপুরের যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ অর্জন করবে, তাকে বিশেষ পুরস্কার প্রদানের ঘোষণাও দেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে মাধবপুর উপজেলার সাউথ কাশিমনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এস. এম. ফয়সল শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ধর্মঘর ইউনিয়নের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বৃত্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সৈয়দ মো. ফয়সল। শিক্ষক আবেদ মিয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সায়হাম গ্রুপের এইচআর এডমিন ক্যাপ্টেন (অবঃ) লিয়াকত হোসেন, সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক, ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ, মাধবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল ইসলাম কামাল, ধর্মঘর কলেজের অধ্যক্ষ আলী আজগর, শাহজালাল কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল হক, গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব হরমুজ আলী, সাউথ কাশিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: দিল্লর আলী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল আজিজ, পৌর বিএনপির সভাপতি গোলাপ খান সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আল রনি প্রমুখ।
সৈয়দ মোঃ ফয়সল আরো বলেন, আমি ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। একাধিকবার হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। ফলাফল যাই হোক, আমি কখনও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হইনি। তিনি বলেন, যতদিন বেঁচে থাকব, জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাব—এটাই আমার অঙ্গীকার। মাধবপুরে যত দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে, তার সবই বিএনপি সরকারের আমলে আমার প্রচেষ্টায় সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে তৎকালীন পল্লী উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের সহায়তায় মাধবপুর থেকে ধর্মঘর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ করা হয়। এছাড়া চৌমুহনী সোনাই নদীর ওপর নির্মিত বিশাল সেতুর ফলে ধর্মঘরের সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়েছে। বুল্লা, খরকি ও বাঘাসুরা এলাকার রাস্তার উন্নয়নও তাঁর হাত ধরেই হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি কিছু পাওয়ার চেষ্টা করিনি। শুধু মানুষের ভালোবাসাই চেয়েছি। এবার জনগণের অনুরোধে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও অংশ নিতে চাই। এবার আমাকে খালি হাতে ফেরাবেন না। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
সৈয়দ মো: ফয়সল বলেন, আমাদের দলের প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফেব্রুয়ারিতে দেশে নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। তিনি বলেন, যারা শহীদ হয়ে ফ্যাসিবাদ সরকারকে বিতাড়িত করেছে, তাদের সম্মান ও মূল্যায়ন করতে হবে। তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির মধ্যেই জাতির ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়—যেখানে থাকবে না দুর্নীতি, লুটপাট, ঘুষ কিংবা গুম। থাকবে গণতন্ত্র, সুশাসন এবং জনগণের অধিকার।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan