মিশিগানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়ক প্রোগ্রাম হুমকির মুখে

আপলোড সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ১২:০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ১২:০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
ডেট্রয়েট, ১৮ আগস্ট : মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং রাজ্যের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুবিধাবঞ্চিত পটভূমি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য চালু করা বিভিন্ন প্রোগ্রাম এখন ঝুঁকির মুখে। মার্কিন বিচার বিভাগের (DOJ) নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এসব উদ্যোগ বৈষম্য ও পৃথকীকরণের শামিল হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকরা এ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
২৯ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক স্মারকলিপিতে জানান, অতীতে ফেডারেল সরকার "বিভিন্ন বৈষম্যমূলক অনুশীলনের প্রতি অন্ধ দৃষ্টি রেখেছে, এমনকি উৎসাহিত করেছে," কিন্তু এখন থেকে এ ধরনের কার্যক্রম আর বরদাস্ত করা হবে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতিমালা ফেডারেল তহবিলপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যদি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল যেমন ডেট্রয়েটকে লক্ষ্য করে শিক্ষার্থী নিয়োগ করে এবং তা জাতি বা লিঙ্গভিত্তিক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, তবে তা বেআইনি হবে। একইভাবে, বৈচিত্র্য (diversity) প্রশিক্ষণে কোনও শিক্ষার্থী বা কর্মীকে স্টেরিওটাইপ করার সুযোগ থাকলেও তা বৈষম্যের শামিল ধরা হবে। এমনকি “বিআইপিওসি স্টাডি লাউঞ্জ” (Black, Indigenous, and People of Color) এর মতো বিশেষ সুবিধা যদি নামেই বৈষম্যমূলক মনে হয়, তবে তা-ও আইন ভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে।
মিশিগান রাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটর জিম রানেস্ট্যাড স্মারকলিপিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে ভয়াবহ বর্ণগত বৈষম্য দূর করার জন্য এটি একটি তাজা বাতাসের নিঃশ্বাস।”
অন্যদিকে, উচ্চশিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দেশিকাটি সরাসরি কৃষ্ণাঙ্গ ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করবে। আরমান্ড অ্যালাকবে, আমেরিকান কাউন্সিল অফ ট্রাস্টিজ অ্যান্ড অ্যালামনাই-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, মন্তব্য করেন, “এটি ট্রাম্প প্রশাসনের DEI (Diversity, Equity, Inclusion) প্রোগ্রামের প্রতি সবচেয়ে স্পষ্ট আইনি অবস্থান।” তিনি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ডগুলোকে এটিকে নীতি-নির্ধারণের রোডম্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত।
ডেট্রয়েট কলেজ অ্যাক্সেস নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক সাইকিয়া লি বলেন, নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় ইতিমধ্যেই নিয়োগ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। “আমরা সেপ্টেম্বরে ভর্তির মৌসুমে কম কলেজ প্রতিনিধিকে ডেট্রয়েটে আসতে দেখব। কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের পথ কমে যাবে,” তিনি উল্লেখ করেন।
মিশিগান কলেজ অ্যাক্সেস নেটওয়ার্কের পরিচালক রায়ান ফিউইনস-ব্লিস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো “অতিরিক্ত সতর্কতা” অবলম্বন করে নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী গোষ্ঠীর জন্য তৈরি প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করে দিলে কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির সংখ্যা হ্রাস পাবে।
তিনি বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে উচ্চশিক্ষা কেবল শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের জন্য নকশা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই বৈষম্য কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন সহায়ক প্রোগ্রাম চালু করা হয়। এখন যদি সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়, তবে কৃষ্ণাঙ্গ ও বাদামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও কমে যাবে। এর প্রভাব শ্রমবাজার ও সামগ্রিক সমাজে পড়বে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীতিমালা সরাসরি ফেডারেল আইন পরিবর্তন না করলেও এর প্রয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর কঠোর চাপ সৃষ্টি করবে। ফলে মিশিগানের শিক্ষাঙ্গনে সমতা আনতে গড়ে তোলা দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগগুলো বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে।
Source & Photo: http://detroitnews.com

 

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com